মহানবী (সা.)-এর সময়ের পবিত্র কোরআনের পাণ্ডুলিপি!

মহানবী (সা.)-এর সময়ের পবিত্র কোরআনের পাণ্ডুলিপি!

ব্রিটেনে প্রাচীনতম কোরআন শরিফের পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবদ্দশায়ই সম্ভবত কোরআনের এই অংশ লেখা হয়েছিল। রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ‘হিজাজি’ লিপিতে লেখা এই পাণ্ডুলিপি প্রায় ১৩৭০ বছরের পুরনো।

প্রায় ১০০ বছর ধরে এই পাণ্ডুলিপি বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডবেরি রিসার্চ লাইব্রেরিতে ছিল। মধ্যপ্রাচ্যসংক্রান্ত বেশ কিছু পাণ্ডুলিপির সঙ্গে ছিল এই পাণ্ডুলিপিও। এতে ধুলো জমে ছিল। নিতান্ত কৌতূহলবশেই পিএইচডি গবেষক আলবা ফেদেলি পাণ্ডুলিপিটি হাতে নেন। পাণ্ডুলিপিটি দেখার পর তাঁর মনে সন্দেহ হয়। এর পরেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রেডিওকার্বন অ্যাকসিলারেটর ইউনিট’-এ পাণ্ডুলিপিটির পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, দুই পাতার পার্চমেন্টের ওপর লেখা পাণ্ডুলিপিটির বয়স প্রায় ১৩৭০ বছর। ‘হিজাজি’ লিপিতে লেখা পৃষ্ঠা দুটি স্পষ্ট পড়াও যাচ্ছে। হিজাজি লিপি হলো, আরবি ভাষার পুরনো লেখ্য রূপ। মূলত ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দ সময় পর্বে পশুর চামড়া বা পার্চমেন্টে লেখা হতো। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন অ্যাকসিলারেটর ইউনিটের পরীক্ষায় দেখা গেছে, পাওয়া যাওয়া পৃষ্ঠা দুটিতে ভেড়া কিংবা ছাগলের চামড়ায় কোরআনের বাণীগুলো হাতে লেখা হয়েছিল। রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে পাওয়া ফলাফল নির্দিষ্টভাবে ঠিক কোন বছর পাণ্ডুলিপিটি লেখা হয়েছে তা বলতে পারেনি। তবে এ ক্ষেত্রে ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই যে পাণ্ডুলিপিটির এই অংশ লেখা হয়েছে, তার সম্ভাবনা প্রবল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এডওয়ার্ড ক্যাডবেরির আর্থিক সাহায্যে পাদরি অ্যালফন্স মিনগানা ১৯২০ সালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে স্থানীয় নানা বিষয়ের প্রায় তিন হাজার পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলো বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রাখা ছিল।

ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। গবেষকদের মতে, এর মানে যিনি পাণ্ডুলিপিটির এই অংশ লিখেছেন তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে জীবিত অবস্থায় দেখেছিলেন। হতে পারে, তাঁর প্রচারও তিনি শুনেছেন। এমনও হতে পারে, এই ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিচিত ছিলেন। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিশ্চিয়ানিটি ও ইসলামের অধ্যাপক ডেভিড টমাস বলেন, ‘ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছ থেকে যেসব বাণী পেয়েছেন, সেগুলোই কোরআনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যা তিনি ৬১০ থেকে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পেয়েছেন।’

তবে আবিষ্কৃত পাণ্ডুলিপিটি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মৃত্যুর পরও লেখা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক টমাস। তিনি জানান, কোরআনের কিছু কিছু অংশ পার্চমেন্ট, পাথর, খেজুরগাছের পাতা ও উটের হাড়ে লেখা হয়েছিল। আর পুস্তক আকারে কোরআন লেখার কাজ শেষ হয় ৬৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাণ্ডুলিপিটি সবার দেখার ব্যবস্থা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এ ভালোবাসা থেকেই বঙ্গবন্ধু যখন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল তার দূরদর্শিতায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠার বিল আনা হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের বাংলাদেশে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)।

সিনেমা অঙ্গনকে ভালোবেসে এদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেও সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। বঙ্গবন্ধু অভিনীত সিনেমাটির নাম ‘সংগ্রাম’। ছবিটি পরিচালনা করেন প্রয়াত নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’। এতে ছোট্ট এক ভূমিকায় হাজির হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি। সে সময়ের চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও চাষী নজরুল ইসলামের অনুরোধে ছোট্ট ওই চরিত্রে অভিনয়ে রাজি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

ছবির চিত্রনাট্যের শেষ দিকে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্যালুট করছে। এই দৃশ্য কীভাবে ধারণ করা যায় সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। একপ্রকার দুঃসাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন ছবিটির নায়ক খসরু। কিন্তু বঙ্গবন্ধু প্রথমে রাজি হননি। পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নানকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে অভিনয়ের জন্য তাকে রাজি করানো হয়।

‘সংগ্রাম’ ছবিটিতে নাযক ছিলেন খসরু আর নায়িকা সূচন্দা। ছবিটি ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়।

বঙ্গবন্ধু যে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন