উদ্দীপন যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশব্যাপি ৫১ তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করলো

উদ্দীপন যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশব্যাপি ৫১ তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করলো

দৈনিক প্রবাহবার্তা : আজ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন আজ। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় উদ্দীপন প্রধান কার্যালয় সহ সারা বাংলাদেশের ৯৩৪ টি শাখাতে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদের সম্মনিত চেয়ারম্যান  ড. মিহির কান্তি মজুমদার এবং প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন  মুহম্মদ শহীদ হোসেন তালুকদার,সম্মানিত এমেরিটাস চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা উদ্দীপন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও বিশেষ অতিথি ছিলেন  ঝন্টু মেসবাহ উদ্দীন আহম্মদ,সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য,উদ্দীপন। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদ সদস্য  মো: মাহবুবুর রহমান,জনাব নাহিদ সুলতানা ,পরিচালনা পর্ষদ সদস্য উদ্দীপন,  মো: সাব্বির আহম্মেদ চৌধুরী, উদ্দীপন পর্ষদ সদস্য ,ড. গোলাম আহাদ কোষাধক্ষ উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদ সদস্য  মিনা সরকার, উদ্দীপন পর্ষদ সদস্য,ড.আফতাব উদ্দীন, উদ্দীপন পর্ষদ সদস্য, ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ- উদ্দীপন পর্ষদ সদস্য, রোকেয়া খাতুন উদ্দীপন পর্ষদ সদস্য,শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন  বিদ্যুৎ কুমার বসু নির্বাহী পরিচালক ও সিইও উদ্দীপন । এছাড়াও ১৩টি জোনের জোনাল ব্যবস্থাপক ও রিজওনাল ব্যবস্থাপকি এবং ৯৩৪ টি শাখার ব্যবস্থাপক র্ভাচুয়ালি যুক্ত ছিলেন সাথে সাথে উদ্দীপনের প্রতিটি শাখাতে দিন ব্যপি ৫১ তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন মো: মুরসোলিন পবিত্র গীতা পাঠ করেন অন্তরা সরকার পবিত্র বাইবেল পাঠ করেন এলিজাবেথ দাস পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ করেন অডিও প্লে করে শুনানো হয় এরপর রওশন জান্নাত রূশনী ও তার দলের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সভার শুরু করা হয়।
পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন  মো: সগির হোসেন,পরিচালক ও মাঠ পরিচালনা উদ্দীপন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি  মো: শহীদ হোসেন তালুকদার,সম্মানিত এমেরিটাস চেয়ারম্যানও প্রতিষ্ঠাতা উদ্দীপন বলেন ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগ পাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় জয়বাংলা বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও বিশেষ অতিথি  ঝন্টু মেসবাহ উদ্দীন আহম্মদ,সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা, সদস্য উদ্দীপন বলেন যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে  বিদ্যুৎ কুমার বসু নির্বাহী পরিচালক ও সিইও উদ্দীপন বলেন আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। অবশেষে নয় মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।উদ্দীপন সেই দ্বীপ্ত শপথ নিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলছে উদ্দীপন এবং এগিয়ে যাবে।উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদের সম্মানীত চেয়ারম্যান  ড. মিহির কান্তি মজুমদার সভাপতির সমাপনি বক্তবে বলেন বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব অংক কষতে থাকে। বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায় আর সে হিসাব কষে পাকিস্তানিরা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
উদ্দীপন দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে কাজ করে চলেছে ভবিষ্যতকে সুদৃড় করার যুদ্ধ এখনো চলমান এ যুদ্ধে আমাদের বিজয় আনতে হবে। আমাদের বাংলাদেশ কে গড়তে অনেক কাজ করতে হবে সেই কাজের এখই সময়। আমাদেরকে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এ ভালোবাসা থেকেই বঙ্গবন্ধু যখন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল তার দূরদর্শিতায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠার বিল আনা হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের বাংলাদেশে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)।

সিনেমা অঙ্গনকে ভালোবেসে এদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেও সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। বঙ্গবন্ধু অভিনীত সিনেমাটির নাম ‘সংগ্রাম’। ছবিটি পরিচালনা করেন প্রয়াত নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’। এতে ছোট্ট এক ভূমিকায় হাজির হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি। সে সময়ের চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও চাষী নজরুল ইসলামের অনুরোধে ছোট্ট ওই চরিত্রে অভিনয়ে রাজি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

ছবির চিত্রনাট্যের শেষ দিকে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্যালুট করছে। এই দৃশ্য কীভাবে ধারণ করা যায় সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। একপ্রকার দুঃসাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন ছবিটির নায়ক খসরু। কিন্তু বঙ্গবন্ধু প্রথমে রাজি হননি। পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নানকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে অভিনয়ের জন্য তাকে রাজি করানো হয়।

‘সংগ্রাম’ ছবিটিতে নাযক ছিলেন খসরু আর নায়িকা সূচন্দা। ছবিটি ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়।

বঙ্গবন্ধু যে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন