স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড়বাড়ি-বগুড়া গ্রামের ১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষনের ফলে এখন তার গর্ভে চার মাসের সন্তান। আর এই সন্তান গর্ভে নিয়ে ঘরের মধ্যেই মূখ লুকিয়ে থাকছে সে। অন্যদিকে ধর্ষক ও তার সহযোগিরা মামলার আসামী হয়েও বীরদর্পে ঘুরছে এলাকায়। মাঝে মধ্যে ধর্ষিতার পরিবারের উপর চড়াও হয়ে মামলা মিটিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। তাদের এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় লাঠিসোটা দিয়ে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুরও করা হয়েছে। ধর্ষিত কিশোরীর মা জানান, পার্শবর্তী কুশবাড়িয়া গ্রামে তার বিয়ে হয়। তার দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে (২২) বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে (১৩) পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। স্বামী আরেকটি বিয়ে করায় তিনি রাগ করে বাবার বাড়ি চলে আসেন।

গ্রামে এসে মাসে ৫০০ টাকার বেতনে প্রতিবন্ধী নারী শাহিদা খাতুনের (৫৫) সেবা করেন। গত জুলাই মাসের ৫ তারিখ কিশোরী মেয়েকে বাড়িতে রেখে তিনি কাজ করতে যান। ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষন করে প্রতিবেশি সামায়াত মোল্লার ছেলে মিলন মোল্লা (৩৫)। একথা যানাজানি হলে মেরে ফেলার হুমকী দেয় মিলন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এক মাস পর কিশোরী মেয়েটি বমি করা শুরু করলে ডাক্তার দেখান। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন তার মেয়ে গর্ভবতি। এই অবস্থায় সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখ কিশোরীর মা ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মিলন মোল্লাকে প্রধান আসামী করা হয়।

আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে থানায় নথিভুক্ত করতে শৈলকুপা থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশ আদালতের নির্দেশ পেয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করলেও আজো একজন আসামীও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো আসামীরা ধর্ষিতা কিশোরীর বাড়িতে এসে নানা ভাবে হুমকী দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে মামলা মিটিয়ে না নিলে বড় ক্ষতি হবে বলে। এ বিষয়ে মামলার আসামী মিলন মোল্লা জানান, তার স্ত্রী মিতা মোল্লা মারা গেছে আনুমানিক ২ মাস হয়েছে। ১৪ বছর বয়সের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি এখন পথে পথে। তিনি এই ঘটনার একটা সমাধান চান। এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আরেক আসামী স্থানীয় আবাইপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ফরিদ মুন্সি জানান, তাকে সামাজিক ভাবে ক্ষতি করতে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি এই ঘটনার কিছুই জানেন না। বিষটি নিয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, আদালতের নির্দেশ পেয়ে তারা মামলাটি নথিভুক্ত করেন। এরপর আসামী গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা করছেন। আশা করছেন দ্রু ত তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

শৈলকুপায় ১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ: সেই কিশোরীর গর্ভে এখন চার মাসের সন্তান!

দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে জেলা নাট্য সমন্বয় পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে

ঝিনাইদহ থেকে জেলা প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান তারিকের রিপোর্টে দেখুন বিস্তারিতঃ
ঝিনাইদহ ০৮ অক্টোবর-২০২০

দেশব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের এইচএসএস সড়কের দলটির জেলা কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়। এসময় ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. এস এম মশিয়ুর রহমান, সদস্য সচিব এ্যাড. এম এ মজিদসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা, দেশব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতন সরকারের ব্যার্থতা উল্লেখ করে ধর্ষনের সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইন বাস্তবায়নের দাবি জানান।

দেশব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ

২২/২৩ বছরের অর্ধলঙ্গ এক মানষিক প্রতিবন্ধি অসুস্থ পাগলীকে নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগী দেখেই বললেন মেয়েটি অন্তঃসত্ত¡া। এখন তার পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া আর বিশ্রাম দরকার। দেয়া হলো প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা। প্রতিবন্ধির গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে আমার অভাবের সংসার হলেও নিজের বাড়িতে এনে রেখেছি। শত অভাবের মধ্যেও সে এখন আমার পরিবারের আরেক সদস্যের মত। বললেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ময়ধরপুর গ্রামের মৃত সালামত আলীর ছেলে আমজাদ আলী। রোববার বিকেলে সরেজমিনে আমজাদ আলীর বাড়িতে গেলে দেখা যায়, মাটির উপর টিনের ছাউনির একটি ঘরের বারান্দায় স্থির হয়ে বসা রয়েছে এই প্রতিবন্ধি। পাশেই রয়েছে খাবারের একটি থালা। মানুষ সামনে গেলেই শুধু মুখের দিকে ফ্যালফেলিয়ে চেয়ে থাকছে। আর মুখে হালকা শব্দ করে কী যেন বলছে। যা বোঝা যাচ্ছে না। আমজাদ আলী জানান, আমি একজন গরীব মানুষ। মাঠে কোন চাষযোগ্য জমি নেই। সারা বছর পরের ক্ষেতে কামলার কাজ করে সংসার চালাই। এক মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে মেয়ে লাবনীর বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে সালমান শাহ রাজমিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু সে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রায় ৬ মাস ধরে শয্যাশায়ী। ফলে এখন শুধু একার রোজগারে সংসার চালাতে হচ্ছে। অভাব তো সারাবছরের জন্য রয়েইছে। তারপরও নিজেরা যেভাবে থাকি খাই সেটা না হয় পাগলির সাথে ভাগাভাগি করে খাবো। তিনি বলেন, এমনটা যদি আমার মেয়ের হতো তাহলে তো আমাকেই দেখতে হতো। পথে পড়ে থাকা অসুস্থ পাগলীকে অনেকে দেখেছে যাদের সামর্থও আছে। কিন্তু কেউ যখন তাকে নিয়ে ভাবেনি তখন আমি তার গর্ভের সন্তানের কথা ভেবে রাস্তায় ছেড়ে দিতে পারিনি। শনিবার তার আলট্রা সনোগ্রাফী করা হয়েছে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক বলেছেন মেয়েটি ৮ মাস গর্ভবতী।

চিকিসকের পরামর্শ অনুযায়ী পাগলীর ব্যবস্থাপত্র দেয়া হচ্ছে। আমজাদ হোসেনের স্ত্রী ছাকিরন নেছা জানান, মেয়েদের গর্ভপাতের সময়টা অত্যন্ত কষ্টের। এমন অবস্থায় মেয়েটি পথে পথে ঘুরে বেড়াবে ভাবতেও খারাপ লাগছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাগলীর থাকার জন্য নিজেদের মত করে ঘর নির্মান করা হচ্ছে। নিজেদেরকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। তারপরও একজন মা হিসেবে একজন মেয়ের জন্য যা করা দরকার শত অভাবের মধ্যদিয়েও সামর্থ অনুযায়ী তা করছেন। প্রতিবেশি পল্লী চিকিৎসক অশ্বিনী বিশ্বাস জানান, তাদের গ্রামের আমজাদ নিতান্তই একজন গরীব মানুষ। তারপরও সমাজের একজন মানুষ হিসেবে একজন অসহায় মানষিক প্রতিবন্ধিকে আপন করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি প্রতিদিনই আমজাদের বাড়িতে গিয়ে ওই পাগলীর খবর নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, পরিচয়হীন পথে ঘাটে ঘোরা ওই মানষিক প্রতিবন্ধি হয়তোবা কোন পশুবৃত্তির মানুষ দ্বারা এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে তার গর্ভের সন্তান তো কোন অপরাধ করেনি। কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন জানান, বাজারে ওই পাগলী বেশ কিছুদিন ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু সে অসুস্থ হয়ে রাস্তার পাশে পড়ে থাকার পর ওই গ্রামের আমজাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন তাকে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন নিজের পরিবারের সদস্যের মত তারা সেবা শশ্রæষা করছেন। এটা শুনেও ভালো লাগছে। তিনি বলেন, এক শ্রেণীর মানুষরুপী অমানুষদের পাশবিক নির্যাতনে এমনটি ঘটতে পারে বলে তার ধারনা। এখন পাগলীকে ছেড়ে দিলে সে হয়তো ঘুরে বেড়াতে পারবে কিন্তু পথে ঘাটে সন্তান প্রসব করলে ওই সন্তানকে কে দেখবে। আবার নবজাতকের জন্ম যদি পথে ঘাটে হয়। সভ্য সমাজের কোন মানুষ যদি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে না আসে। সেটাও দুঃখজনক। পাগলীর যে কোন প্রয়োজনে তিনি আমজাদকে সাহায্য করবেন। সব মিলিয়ে আমজাদ ও তার পরিবারের সদস্যরা যেভাবে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন সে জন্য ওই পরিবারকে ধন্যবাদ দিতে হয়।

কালীগঞ্জে অর্ধলঙ্গ অসুস্থ অজ্ঞাত মানষিক প্রতিবন্ধি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা

শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এ ভালোবাসা থেকেই বঙ্গবন্ধু যখন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল তার দূরদর্শিতায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠার বিল আনা হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের বাংলাদেশে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)।

সিনেমা অঙ্গনকে ভালোবেসে এদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেও সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। বঙ্গবন্ধু অভিনীত সিনেমাটির নাম ‘সংগ্রাম’। ছবিটি পরিচালনা করেন প্রয়াত নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’। এতে ছোট্ট এক ভূমিকায় হাজির হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি। সে সময়ের চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও চাষী নজরুল ইসলামের অনুরোধে ছোট্ট ওই চরিত্রে অভিনয়ে রাজি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

ছবির চিত্রনাট্যের শেষ দিকে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্যালুট করছে। এই দৃশ্য কীভাবে ধারণ করা যায় সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। একপ্রকার দুঃসাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন ছবিটির নায়ক খসরু। কিন্তু বঙ্গবন্ধু প্রথমে রাজি হননি। পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নানকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে অভিনয়ের জন্য তাকে রাজি করানো হয়।

‘সংগ্রাম’ ছবিটিতে নাযক ছিলেন খসরু আর নায়িকা সূচন্দা। ছবিটি ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়।

বঙ্গবন্ধু যে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন