প্রবাহবার্তা,আহমেদ সাব্বির রোমিও : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। বৃহস্পতিবার (ফেব্রুয়ারি ১০) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছে, তিনি বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।
শাহরিয়ার আলম জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতারের বিষয়ে মালয়েশিয়া আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। তাকে ইমিগ্রেশন আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইমিগ্রেশন আইন লংঘনের দায়ে তাকে গ্রেফতার করেছে মালয়েশিয়ার অভিবাসন পুলিশ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। দেশে ফিরে আসতে বলা হলেও ফেরেননি। বিএনপি সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় চার্জশিট থেকে অব্যাহত পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরও অধিকতর তদন্তের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তখন তিনি দেশে ফেরেননি।
এর আগে বুধবার সকালে কুয়ালালামপুরে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে চার জাতীয় নেতা হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন। নানা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে তাকে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়। কিন্তু দেশে ফেরায় ঝুঁকি আছে দাবি করেন তিনি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে একটি পরিচয়পত্র নেন। এরপর থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শরণার্থী হিসেবে দেশটিতে বসবাস করছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেল হত্যা মামলা থেকে এম খায়রুজ্জামান খালাস পেয়েছিলেন। তবে কীভাবে খালাস পেয়েছিলেন, সেটা বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি সেখানে হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, কোনো দেশে বাংলাদেশের কেউ ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গ করলে দেশে ফেরত আনার চেষ্টা করা হয়। সেই দেশও তাকে ফিরিয়ে দেয়। এম খায়রুজ্জামানকেও খুব দ্রুত ফিরিয়ে আনা হবে।
এদিকে এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতারের বিষয়ে সাংবাদিকদের মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জয়নুদ্দিন জানিয়েছেন, প্রক্রিয়া অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরাধ সংঘটনের দায়ে এবং তার দেশের অনুরোধের কারণেই তিনি গ্রেফতার হয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নবেম্বর জেল হত্যার পর তিনি পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হন। এরপর তিনি মিশর ও ফিলিপাইনের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে অবসরে পাঠিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তবে ২০০৩ সালে তিনি আদালতের জামিনে মুক্তি পান। ২০০৫ সালে তিনি মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। ২০০৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করেছে।