প্রবাহবার্তা : আমরা যারা রাজনীতি করি তারা বিশেষ করে আওয়ামী ও বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত তারা অর্থাৎ আওয়ামী লীগের লোকেরা জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত বলে থাকেন আর বিএনপি তা মানতে নারাজ এই চলমান বির্তকে একটু পরিসংখ্যানিক ব্যাখা দ্বারা বিশ্লেষণের চেষ্টা করি। প্রিয় পাঠক দয়া করে লেখাটি পড়বেন। শুরুতে চলমান বিতর্ক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার কাণ্ডের সাথে জড়িত কিনা। এই বিষয়ে মন্তব্য না করে শুধু বলি বঙ্গবন্ধু শহীদ হবার কারণে সব চেয়ে লাভবান হয়েছে যে মানুষটি তিনি জেনারেল জিয়া। তার উত্থানের শুরুতে দেখা যায় যখন তিনি বন্দী তখন তাকে মুক্ত করার জন্য তিনি কর্ণেল তাহেরের নিকট চিঠি লেখেন তার ক্ষমতায় আসার পর তিনি কর্ণেল তাহেরের ফাঁশি দিয়ে প্রমান করেন প্রয়োজনে কত কঠিন তিনি হতে পারেন।বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা থাক বা না থাক তার সময়েই বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পেয়েছে জামাই আদর। এই ধারা চলেছে দীর্ঘ ২৩ বছর। খুনিকে সহায়তা করা তো খুনের আর এক নাম। সব খুনিকে এক সঙ্গে লিবিয়ায় রাখা নিরাপদ নয় মনে করে ১৯৭৬ সালের ৮ জুন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১২ জনকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেন। কয়েকজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ইত্তেফাককে বলেন, খুনিরা লিবিয়াতে বসে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্র করতে পারে -এই আশংকা থেকেই তাদের চাকরি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারী কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান ও কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশীদ চাকরিতে যোগ দিতে রাজি হয়নি। তারা জিয়া সরকার ও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির সঙ্গে সমঝোতা করে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে। জিয়া সরকার যাদেরকে চাকরি দেয় তাদের মধ্যে লে. কর্নেল ডালিম————–চীন দূতাবাসে প্রথম সচিব, লে. ক আজিজ পাশা—— আর্জেন্টিনায় প্রথম সচিব, মেঃ মহিউদ্দিন আহমেদ– আলজেরিয়ায় প্রথম সচিব, মেজর বজলুল হুদা ——– পাকিস্তানে দ্বিতীয় সচিব, লে. কঃ শাহরিয়ার রশিদ- ইন্দোনেশিয়ায় দ্বিতীয় সচিব, মেজর রাশেদ চৌধুরী—- সৌদি আরবে দ্বিতীয় সচিব, মেজর নূর চৌধুরী ——— –ইরানে দ্বিতীয় সচিব, মেজর শরিফুল হোসেন— -কুয়েতে দ্বিতীয় সচিব, কর্নেল কিসমত হাশেম—– আবুধাবিতে তৃতীয় সচিব, লে. খায়রুজ্জামানক——- মিসরে তৃতীয় সচিব, লে. নাজমুল হোসেন——- -কানাডায় তৃতীয় সচিব ও লে. আবদুল মাজেদ——– সেনেগালে তৃতীয় সচিব হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। ঢাকা থেকে শমসের মবিন চৌধুরী তাদের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করে নিয়োগপত্র, ব্যাগ, জিনিসপত্র, টাকাসহ লিবিয়া যান। আর লিবিয়ায় খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবকিছু প্রস্তুত করেন সেনা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম শিশু। পরবর্তীতে এরশাদ সরকার ডালিমকে বেইজিংয়ে নিয়োগ দিতে না পেরে পরে হংকংয়ে ভারপ্রাপ্ত মিশন প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেয়। পোল্যান্ডে ডালিমকে একই পদে নিয়োগ দিলেও সে দেশের সরকার তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর লন্ডনে এরশাদ ও ডালিমের মধ্যে এক বৈঠকের ভিত্তিতে তাকে কেনিয়াতে হাইকমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়। অন্যদের মধ্যে পরবর্তীতে আজিজ পাশা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও রোমে দায়িত্ব পালন করে। একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ সৌদি আরবের মিশন উপ-প্রধান হিসাবে নিয়োগ পায়। রাষ্ট্রদূত সিএম শফি সামীর দাবি অনুযায়ী তার বিরোধিতার কারণে এবং বেনজির ভুট্টো গ্রহণ করতে রাজি না হওয়ায় একই পদে মহিউদ্দিনকে করাচিতে নিয়োগ দিতে পারেননি এরশাদ। রাশেদ চৌধুরী টোকিও’র কাউন্সিলর হয়। নূর চৌধুরীকে এরশাদ আমলে আলজেরিয়ায় কাউন্সিলর হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর আগে সে ব্রাজিলে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। শরিফুল হোসেন ওমানে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স নিযুক্ত হয়। অন্যরাও পদোন্নতি পায়। তাদের জন্য পদোন্নতি, সুযোগ সুবিধা সব অবারিত ছিল। শুধু তাই নয়, এসব খুনি জিয়া,এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় রাজনীতিতে অংশ নেয় এবং রাজনৈতিক দল গঠন করে। শাহরিয়ার রশিদ ও বজলুল হুদা ১৯৮০ সালের পর প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি নামের একটি দল গঠন করে। ১৯৮৭ সালে ফারুক রহমান ও আব্দুর রশিদ গঠন করে ফ্রিডম পাটি বজলুল হুদা ফ্রিডম পার্টির হয়ে ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে মেহেরপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। আর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার (প্রসঙ্গত জিয়াউর রহমানের সহ ধর্মিণী বলে)ভোটার বিহীন এক তরফা নির্বাচনে কুমিল্লা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় লে. কর্নেল রশিদ। খালেদা জিয়ার আমলে খুনিরা সংসদে বসে। আবার আসি জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে, আপনি আমার আস্থাভাজন না হলে আমি কেন আপনার সাথে সক্ষতা গড়ে তুলবো। কেন আপনার সহযোগীতা করবো। সকল সুধী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছি, আমি কাওকে অসম্মান করি না এবং বিএনপি পন্থী সকল মানুষের প্রতি, যদি আমি জানি আমার বা আপনার বাবার খুনি বা আপনাদের(বিএনপি ) কথায় ধরলাম খুনি না কিন্তু প্রমাণিত সত্য আপনাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাহায্য কারী, এটা শুনলে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সন্তান তাদের কেমন লাগে বলেন। যে সেনা অফিসার জনাব তারেক রহমান ভাইকে গ্রেফতার করেছিলো তার উপর রাগ করেন (বিএনপি) তাহলে জাতির পিতার নিজের কন্যার কি মনে হতে পারে। কউকে ছোট করে কেই বড় হতে পারেনা। আমাদের জাতীয় পরিশোধন দরকার। জেনারেল জিয়ার ১৯ দফা নতুন প্রজন্ম কতটুকু ধারণ করে। আমরা আর শেখ মুজিব পাবোনা। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচানায় আসে বারবার আওয়ামী লীগের ভুলে। কিন্তু একটি আদর্শ দিয়ে আসতে পারলে ভালো হত। একটি দেশে দুটি আর্দশ থাকতে পারে। দুটো পরষ্পর বিরোধী শক্তি না। এতে জাতি বিভক্ত হবে। পরম করুনাময় আমারা এক জাতি হিসেবে থাকতে চাই। সেই ঐক্যবদ্ধ জাতির বিবেকের দায় থেকে প্রশ্ন শহীদ রাষ্ট্র প্রতি জিয়াউর রহমান এ দেশের ২য় নায়ক হতেন যদি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা না করতেন। যে ভাবে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনাতার ঘোষণা করেছেন ঠিক সেই ভাবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো গুলো যদি শেষ করতেন। খুনি মোস্তাকের মতন ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ বহাল রেখে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করে তিনি প্রমান কি করেন না তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার পক্ষে।