প্রবাহবার্তা প্রতিবেদন : হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা বৃহস্পতিবার উদযাপিত হয়েছে। তবে শারদীয় দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ, মন্দিরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষাপটে কালীপূজা নামে পরিচিত এই উৎসবে নানা প্রতিবাদী কর্মসূচিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
এদিন রাতে মণ্ডপে মণ্ডপে শ্যামা দেবীর পূজা হয়। পাশাপাশি প্রসাদ বিতরণ ও আরতির আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তাণ্ডব ও বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বানে অনেক মন্দির-মণ্ডপে প্রতিমার বদলে ঘটে শ্যামাপূজা আয়োজন করা হয়। বেশিরভাগ মণ্ডপ ও মন্দিরে দীপাবলি উৎসবও বর্জন করা হয়। তবে দীপাবলি উদযাপনে সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের ঘরে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। একাধিক দিনের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পূজাকে ঘিরে আড়ম্বরতা পরিহার করা হয়। এছাড়া করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে নিরাপত্তামূলক আলোকবাতি ছাড়া আলোকসজ্জাও পরিহার করা হয়।
প্রতিবাদী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শ্যামাপূজার আগে মন্দির-মণ্ডপে এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে দর্শনার্থী ও ভক্তরা নীরবতা পালন করেন। মন্দির-মণ্ডপের প্রবেশমুখে কালো কাপড়ে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াও’ শীর্ষক সহিংসতাবিরোধী স্লোগানসংবলিত ব্যানারও টাঙানো হয়।
রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শ্যামাপূজা উদযাপিত হয় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে রাতে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে দীপাবলি উৎসব বর্জন করার পাশাপাশি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোয়া ৬টা পর্যন্ত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে নীরবতা পালন করা হয়। পূজামণ্ডপের প্রবেশমুখে কালো কাপড়ে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াও’ শীর্ষক সহিংসতাবিরোধী স্লোগানসংবলিত ব্যানারও টাঙানো হয়।
এছাড়া রাজধানীর সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, বনগ্রাম রোডের রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, জয়কালী মন্দির রোডের রামসীতা মন্দির, রায়েরবাজার শেরেবাংলা রোড কালীমন্দির, পোস্তগোলা শ্মশান, লালবাগ শ্মশান, ঠাঁটারীবাজার, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ফরাশগঞ্জ, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, সূত্রাপুর, দয়াগঞ্জ, শ্যামবাজার, কোতোয়ালি, উত্তর মৈশুণ্ডী, দক্ষিণ মৈশুণ্ডী, নারিন্দা, যুগীনগর, নবাবপুর, রাজারবাগ, বাড্ডা, পান্নিটোলা, মতিঝিল, রমনা, গুলশান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন স্থানেও প্রতিবাদ কর্মসূচি রেখেই শ্যামাপূজা উদযাপিত হয়।