প্রবাহবার্তা প্রতিবেদন :স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কেনাকাটা-সংক্রান্ত ফাইল গায়েবের ঘটনায় আরও তিন কর্মচারীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এর আগে গত রোববার সকালে মন্ত্রণালয়ের ৬ কর্মচারীকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাদের দেওয়া তথ্য-উপাত্তের সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার আরও তিন কর্মচারীকে সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়।
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ থেকে ফাইল গায়েবের পর এ পর্যন্ত মোট ৯ কর্মচারীকে সিআইডি কার্যালয়ে আনা হলো। তবে একজন ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট শাখার কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর সিআইডি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ফাইল গায়েবের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত। কারণ গায়েব হওয়া ফাইলগুলো যেখানে রাখা হতো, সেখানে মন্ত্রণালয়ের বাইরে থেকে কারও প্রবেশ করার সুযোগ নেই। অথচ সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা জানেন না, সেটি হতে পারে না। এ অবস্থায় তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের মূল উদ্দেশ্য গায়েব হওয়া ফাইল উদ্ধার করা। এ লক্ষ্য সামনে রেখেই মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তদের সঙ্গে যুক্ত সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে কর্মচারীদের কাছ থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ফাইল উদ্ধারের মতো কোনো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়নি। যে কারণে ৯ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
গত রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী জোসেফ সরদার, আয়শা সিদ্দিকা, বাদল, বারী, মিন্টু ও ফয়সালকে সিআইডি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তিন দিনের মাথায় মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের আরও তিন কর্মচারী অহিদ খান, হাবিব ও সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। অহিদ খান মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
স্বাস্থ্যের ফাইল গায়েবের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সোমবার রাতে নাসিমুল গনি টোটন নামে এক টিকাদারকে রাজশাহী থেকে ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার বিকেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তের প্রয়োজনে যে কাউকে যে কোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রী : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল গায়েবের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল গায়েবের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ। এ ব্যাপারে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ফাইল গায়েবের ঘটনা নজরে আসার পর ওই দিনই রাজধানীর শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়। ওই জিডির তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ক্রয়-সংক্রান্ত শাখা-২ এর কম্পিউটার অপারেটর জোশেফ সরদার ও আয়েশা গত বুধবার কাজ শেষ করে ফাইলটি একটি কেবিনেটে রেখে যান। ওই ফাইলে ১৭টি নথি ছিল। পরদিন অফিসে এসে ফাইলটি আর কেবিনেটে পাওয়া যায়নি।