যাযাবর পলাশ : নাম তার মো: শাহিদুল ইসলাম (শিমুল)। সবাই তাকে শিমুল হাসান নামেই চেনে। “প্রেমের কি নাম দেবো বলনা” গান দিয়ে দারুণ সাড়া ফেলেছেন প্রতিভাবান এই তরুণ লোকসংগীত শিল্পী। শিমুল হাসানের জন্মস্থান বগুড়া জেলা সারিয়াকান্দি উপজেলার বিরামের পাঁচগাছি চড়ে তার গ্রামের বাড়ি। তবে বর্তমানে থাকেন গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কাটাবাড়ি ইউনিয়নে। শিমুল হাসানের গায়ক হওয়ার স্বপ্নটা ছিল ছোটবেলা থেকেই। গ্রাম গঞ্জে বাউল গান দিয়ে তার গানের জগতে যাত্রা শুরু। নিজের এলাকার আশেপাশে বা দূর-দূরান্তেও গানের মঞ্চে যেখানেই গানের অনুষ্ঠান হতো সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে ছুটে যেতেন তিনি। মঞ্চে একটা গান গাওয়ার জন্য অনেককেই অনুরোধ করতেন। কখনো গান গাওয়ার সুযোগ হতো, কখনো বা মনে আশা মনে রেখেই বাড়ি ফিরতেন। তবে সুযোগ পেলেই নিজের কণ্ঠের মূর্ছনায় গোটা মঞ্চ মাতিয়ে দিতেন শিমুল হাসান। এভাবেই একটা সময় মুখে মুখে এলাকায় তার নাম ছড়িয়ে পরে। একজন বাউল শিল্পী হিসেবে এলাকা এবং এলাকার বাইরের অনুষ্ঠান থেকে তার ডাক আসতে শুরু করে। তাই স্বপ্নটা আরও বড় আকারে পূরণ করতে গান শেখার জন্য গাজীপুরে চলে আসেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী মিজানুর রহমান মিজানের কাছে বাউল গানের উপর তালিম নেন তিনি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে সঙ্গীতাঙ্গনের মানুষজনের সাথে উঠাবসা শুরু হয় তার। ২০২০ সালে “প্রেমের কি নাম দেবো বলনা” শিরোনামে শিমুল হাসানের কণ্ঠে প্রথম মৌলিক গান প্রকাশ পায়। এই একটি গানই শিমুলের জীবনের গতিপথ পাল্টে দেয়। দেশের বাউল গানপ্রিয় শ্রোতাদের কাছে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে গানটি। অনেকেই গানটি কভার করে গেয়ে ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়তে শুরু করে। যার কারণে খুব সহজেই গানটি ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শিমুল হাসানকে। তরুণ এই বাউল শিল্পী এ পর্যন্ত ২৫ টিরও অধিক মৌলিক গান গেয়েছেন। যার অধিকাংশই হিট। তবে শিল্পী হিসেবে এই এগিয়ে চলার পথে নিজের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম এবং স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার এর সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে বলে মনে করেন গায়ক শিমুল হাসান। এছাড়াও কাছের বন্ধুদের অনেক উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি বলে জানান তিনি। ব্যক্তিগত ভাবে গানকেই নিজের প্রফেশন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আর গান গেয়েই কাটিয়ে দিতে চান সারাজীবন। গানের জগতে নিজের পথচলা প্রসঙ্গে শিমুল হাসান বলেন, “আমি আমার গানের শ্রোতাদের একটা কথা বলতে চাই আপনাদের ভালোবাসা এবং উৎসাহ আমাকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে। সামনে আপনাদের আরও ভালো ভালো অসংখ্য গান শোনাতে চাই। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা বাংলার লোকগান গুলো বেশি বেশি শুনবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন যতদিন বেঁচে থাকি আপনাদের গান শোনাতে পারি।