বিশেষ প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার মানবিক ইউএনও খ্যাত বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকারের মানবিকতায় স্বপ্ন জয়ের পথ খুললো বিরামপুর উপজেলার মোছাঃ আয়শা সিদ্দিকা হাবিবা এবং আফসানা ফারহানা মিমির। মেধা যে অর্থ-বিত্ত দেখে আসে না তার অনন্য উদাহরণ তারা। জানা গেছে যে, হাবিবা এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, কিশোরগঞ্জে এবং মিমি এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেটে চান্স পেয়েছে। সূত্র মতে, বিরামপুর উপজেলা থেকে এবার ৬ জন বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তাদের মধ্যে এই দুজনেই জীবনযুদ্ধে অনেক কঠিন পথ অতিক্রম করে এ পর্যন্ত এসেছে। তবে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়। কলেজে ভর্তি হওয়া এবং পড়ালেখার খরচ চালানোর যথেষ্ট সামর্থ্য তাদের নেই। কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে পরিশেষে সাক্ষাৎ করেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকারের সাথে। তাদের এই সমস্যার কথা শুনে ইউএনও পরিমল কুমার সরকারের হৃদয়ে দাগ কেটে যায়। তিনি সাথে সাথেই হাবিবা এবং মিমির মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া সহ পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার পথ সুগম করে দেন। উল্লেখ্য যে, এদের মধ্যে হাবিবা তার বাবাকে ১২ বছর আগেই হারিয়েছে, মা গরু-ছাগল পালন করে এবং অন্যান্য কৃষি কাজ করে। আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা, ব্যাংক থেকে পাওয়া বৃত্তির টাকা দিয়ে এতদিন পড়াশোনা করেছে। অন্যদিকে, মিমির বাবা-মা আলাদা থাকে। মা গার্মেন্টসে কাজ করে পড়িয়েছে। দুজনই এই উপজেলাধীন কাটলা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশ করে পরবর্তীতে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেছে। হাবিবা এবং মিমির উদ্দেশ্যে ইউএনও পরিমল কুমার সরকার বলেন, ‘তাদের দুজনের জন্য অনেক আশীর্বাদ রইল, নিশ্চয়ই তারা অনেক বড় ডাক্তার হবে এবং এদেশের দুঃখ-নিপীড়িত মানুষের ভরসাস্থল হবে। আশাকরি তারা তাদের অতীতকে ভুলে যাবে না। এ ধরণের সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা অসাধারণ মেধাবী মুখগুলোই আমাদের ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হবে, এই প্রত্যাশা করি।’