কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গেল ২ ফেব্রুয়ারি বিদ্যাপাঠ শেষে স্কুল থেকে বের হয়ে বিদ্যালয়ের মেইন ফটকের পাশে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছিল ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া রাহাত মোল্লা নামের এক শিক্ষার্থী। তখন দুপুর আড়াইটা বাজে। এ সময় রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে মুখে মাক্স পড়া অবস্থায় চৌদ্দ থেকে পনের বছর বয়সের দুজন কিশোর এসে রাহাতের নিকট তার পিতার নাম জানতে চায়। তখন রাহাত তার বাবার নাম বলতেই মুখে মাক্স পরিহিত কিশোরগ্যাংয়ের একজন রাহাতকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। পরে মুছুর দিয়ে রাহাতের বাম হাত ভেঙ্গে দেয় কিশোরগ্যাং। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া রাহাত মোল্লার সাথে। ওই শিক্ষার্থী উপজেলার দস্যুনারায়নপুর এলাকার তাবারক মোল্লার ছেলে। ভুক্তভোগীর পিতা বাদী হয়ে থানায় লিখত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, রাহাত পঞ্চম শ্রেণী থেকে পাস করে এ বছর কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। সে নিজ বাড়ী থেকে রিক্সা দিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে। গেল ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের মতো স্কুল ছুটির পর মেইন গেইটের পাশে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছিল রাহত। খালি রিক্সা পেতে কিছুটা বিলম্ব হয় তার। এ সময় কিশোরগ্যাংয়ের দু’জন মুখে মাক্স পড়ে বিপরীত পাশ থেকে এসে বাবার নাম জানতে চায় রাহাতের নিকট। পরে রাহাত তার বাবার নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞাত কিশোরগ্যাংয়ের একজন তাকে মেরে গুরুতর জখম করে। একপর্যায় মুছুর দিয়ে রাহাতের বাম হাত ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায় রাহাতের পরিবার কিশোরগ্যাংয়ের ভয়ে ছেলেকে স্কুলে দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ছেলের পড়া লেখা বিষয়ে শঙ্কিত তার পরিবার। রাহাতের পিতা তাবারক জানান, কি কারণে এবং কারা আমার ছেলেকে মেরে হাত ভেঙ্গে দিল এর বিচার চেয়ে স্কুলের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান ও কাপাসিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। গতকাল সকালে ভুক্তভোগী ও তার পিতা তাবারক মোল্লা স্কুলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সারা পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছ। স্থানিয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলের আশে পাশে কিছু বখাটে ছেলেদের চলাফেরা সব সময় দেখা যায়। ওরা কিশোরগ্যাং নামে এলাকায় অনেকের কাছে পরিচিত। প্রায় সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা কিশোরগ্যাংয়ের শিকার হয় বলে জানা যায়। এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ উপ- পরিদর্শক তপন চন্দ্র বাকালী জানান, শিক্ষার্থীকে মারধর করার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, ঘটনাটি অত্যান্ত দু:খজনক। এ বিষয়ে আমি কাপাসিয়া থানার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।