দৈনিক প্রবাহবার্তা প্রতিবেদন : বিএনপির পথ ধরে সংসদ ছাড়বে না জাতীয় পার্টি (জাপা)। বিএনপি এমপিদের পদত্যাগে যেসব আসন শূন্য হবে, সেগুলোতে উপনির্বাচনে অংশ নেবে জাপা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট নয়, এককভাবে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। জাপা সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গনমাধ্যমকে বলেছেন, আগে বিএনপির এমপিদের আসন শূন্য হোক, তারপর উপনির্বাচনের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে। জাতীয় পার্টি সব নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে। তারা রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে লড়ছে।
জাপা সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে উপনির্বাচন বর্জনের সুযোগই নেই। বর্জন করলে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদপন্থিরা জি এম কাদেরকে বিএনপিপন্থি হিসেবে প্রচার করে আরও কোণঠাসা করবে। বিএনপি যেহেতু ভোটে অংশ নেবে না, তাই জাপাকে প্রার্থী দিতেই হবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে। বিনিময়ে একটি, দুটি আসন পেলে বাড়তি পাওনা হবে জাপার।
একাদশ নির্বাচনে জাপাকে ২৬টি আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদ ইসলাম পাপুলের কাছে হেরে যান জাপার এমপি মো. নোমান। বাকি ২৫ আসনের ২১টিতে জয়ী হন লাঙ্গলের প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত জাপার প্রার্থীরা বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং সিলেট-২ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের কাছে হেরে যান। বরিশাল-৩ আসনে জাপার প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপু মহাজোট সমর্থিত টিপু সুলতানকে হারিয়ে এমপি হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনে আওয়ামী লীগকে এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টিকে হারিয়ে জয়ী হন বিএনপির প্রার্থীরা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেওয়ায় বগুড়া-৬ আসন আগেও একবার শূন্য হয়েছিল। নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে এবং উপনির্বাচনে বিএনপির জি এম সিরাজের কাছে পরাজিত হন জাপার নুরুল ইসলাম ওমর। আবার উপনির্বাচন হলে প্রার্থী হতে চান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন আগের দুই নির্বাচনে জাপার মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হওয়া জিয়াউল হক মৃধা। তাঁরা হারেন বিএনপির আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে।
জিয়াউল হকের মামলায় দলীয় দায়িত্ব পালনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন জি এম কাদের। রেজাউল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেছেন, দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ভাববেন প্রার্থী হবেন কিনা। তবে জিয়াউল হকের মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ নেই।
এমপির মৃত্যু, পদত্যাগ এবং শপথ না নেওয়ায় চলতি সংসদের ২০টি আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। একটিতে উপনির্বাচন চলমান। ১৩টিতে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে শুধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য রংপুর-৩ আসনে জয়ী হয়েছে জাপা। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন না। সিলেট-৩ এবং টাঙ্গাইল-৭ বাদে কোথাও নূ্যনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারেনি দলটি।
যে আট উপনির্বাচনে জাপার প্রার্থী ছিলেন না, এর দুটিতে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল। চারটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতাতে দলীয় মনোনয়ন নিয়েও নির্বাচন থেকে সরে যান লাঙ্গলের প্রার্থী। আর দুটিতে প্রার্থী দিতে পারেনি জাপা।